ক্রীড়া ডেস্ক ॥ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলের করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। তারপরও আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়াকে বাদ দিয়ে সেই ব্রাজিলেই বসছে কোপা আমেরিকার আসর। এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন দেশটির সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে জাতীয় দলের ফুটবলাররাও। ব্রাজিলের কোচ তিতেও তার শিষ্যদের সমর্থনে দাঁড়িয়ে গেছেন। এমনকি তারা পাশে পাচ্ছেন আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের ফুটবলারদেরও। কোপা আমেরিকার এবারের আসর যৌথভাবে আয়োজন করার কথা ছিল আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার। কিন্তু প্রথমে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আয়োজকদের তালিকা থেকে বাদ যায় কলম্বিয়ার নাম। পরে করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত আর্জেন্টিনার নামও কাটা যায়। ফলে তড়িঘড়ি করে ব্রাজিলের কাঁধে তুলে দেওয়া হয় দায়িত্ব। কিন্তু এটা নিয়েই দেখা দিয়েছে বড় জটিলতা। আয়োজক দেশ হিসেবে ব্রাজিলের নাম ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশটির সাধারণ মানুষ। কারণ দেশটির করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে আগেই। এরইমধ্যে দেশটির প্রায় ৫ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পরিস্থিতি এমনই যে, সেখানে এই মুহূর্তে কোপা আমেরিকা আয়োজনের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে পুরো ব্রাজিল দল। আসর মাঠে গড়ালেও তারা বয়কটের চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে। ইকুয়েডরের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে মাঠে নামার আগে দলীয় সংবাদ সম্মেলনে হাজির হননি ব্রাজিলের অধিনায়ক কাসেমিরো। তার বদলে হাজির হওয়া কোচ তিতে নিজেই জানিয়ে দেন, তার দলের খেলোয়াড়রা কোপা আমেরিকা বয়কট করতে যাচ্ছে। গত শুক্রবার ইকুয়েডরকে ২-০ গোলে হারানোর পর মুখ খোলেন কাসেমিরো নিজেই। রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার বলেন, ‘সবাই জানে ব্রাজিলে কোপা আমেরিকা আয়োজনের ব্যাপারে আমার অবস্থান কি। এর চেয়ে পরিস্কার করে আর বলার তেমন কিছু নেই। আমরা প্যারাগুয়ের বিপক্ষে (৮ জুন) ম্যাচ শেষে এ ব্যাপারে আমাদের মতামত আরও খোলাসা করবো। কোচ তিতেসহ দলের সবাই এক্ষেত্রে একমত।’ ব্রাজিল দলের এই অবস্থানকে সমর্থন জানাচ্ছেন আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের ফুটবলাররা। এর মধ্যে উরুগুয়ের লুইস সুইয়ারেস, এদিনস কাভানিরা প্রকাশ্যেই ব্রাজিল দলের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন। আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি তো বলেই বসেছেন, কোপা আমেরিকা আয়োজন করার মতো অবস্থায় নেই ব্রাজিল। বার্সেলোনায় মেসির নতুন সতীর্থ সার্জিও আগুয়েরোও প্রায় একইরকম মন্তব্য করেছেন। আগামী ১৩ জুন কোপা আমেরিকার পর্দা উঠার কথা। যদি প্যারাগুয়ে ম্যাচের পরে যদি কাসেমিরোরা অবস্থান পরিস্কার করেন, তাহলে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবলের হাতে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য মাত্র পাঁচ দিন সময় থাকবে। এখন পর্যন্ত কনমেবলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। সামনে পরিস্থিতি যে আরও ঘোলাটে হতে যাচ্ছে, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই বললেই চলে।
Leave a Reply